ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫
৪৯ নিবন্ধিত দলের মধ্যে ৩৪টি দল ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায়
অধিকাংশ দলের দাবি—প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করা হোক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জুন পর্যন্ত সময়সীমা ঘিরে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ ও অনিশ্চয়তা
বিএনপি, বিএনএফ, খেলাফত, কল্যাণ পার্টি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দল ডিসেম্বরকেই চূড়ান্ত সময়সীমা মানছে
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৯টি সক্রিয় রাজনৈতিক দলের মধ্যে কমপক্ষে ৩৪টি দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়, যা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত “ডিসেম্বর থেকে জুন”-এর সময়সীমা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও, এই ছয় মাসের সময়সীমাকে রাজনৈতিক দলগুলোর বড় অংশ দেখছে “ক্ষমতা দীর্ঘায়নের অজুহাত” হিসেবে।
“ডিসেম্বরের বাইরে যাওয়ার একটিও যুক্তি নেই”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদ বলেন,
“নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার একটিও কারণ নেই। কেন আপনি ডিসেম্বরের বাইরে গিয়ে নির্বাচন দেবেন, তার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে নেতাকর্মীদের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেন,
“সংস্কার ও বিচারের আগে নির্বাচন নয়। তবে সময়সীমার মধ্যে ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলেও নির্বাচন হতে পারে।”
✅ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় যারা:
বিএনপি, কল্যাণ পার্টি, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামিক ফ্রন্ট, মুক্তিজোট, বাসদ, এলডিপি, সিপিবি, জেএসডি, এনডিএম, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, জামায়াত (সংশোধিত অবস্থান)
এসব দল বলছে, “সংস্কার চলমান থাকতে পারে, কিন্তু নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ নেই।”
⚖️ সংস্কার শেষে ফেব্রুয়ারি-মার্চে নির্বাচন মেনে নেওয়ার পক্ষপাতি:
জামায়াতে ইসলামি, এবি পার্টি, ইসলামি আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল
তারা বলছে, “রোজার আগে বা পরে হলেও নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করা হোক।”
❌ জুন পর্যন্ত অপেক্ষার বিরোধিতা:
বিএনএফ, বিজেপি (আন্দালিব পার্থ), ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী)
যুক্তি: “ক্ষমতা দীর্ঘায়নের ফাঁদ তৈরি করছে অন্তর্বর্তী সরকার”
🕊️ অবস্থান অস্পষ্ট বা নিরপেক্ষ মন্তব্যকারী দলগুলো:
তৃণমূল বিএনপি, ইনসানিয়াত বিপ্লব, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল), সাম্যবাদী দল
তারা সময় নয়, বরং সুষ্ঠু নির্বাচন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে
রুহিন হোসেন প্রিন্স (সিপিবি):
“সরকার সহজ জিনিসকে জটিল করে তুলছে। ‘জুন’ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটাও দেখতে হবে।”
সাইফুল হক (বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি):
“সরকার সময় টানছে, যেন পছন্দের দল সময় পায়, অথবা বন্দর-করিডোর নিয়ে কিছু চুক্তি সম্পন্ন করা যায়।”
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের বিতর্কিত অভিজ্ঞতার কারণে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর এখন বাংলাদেশে
জুলাই গণহত্যার বিচার এবং রাজনৈতিক সংস্কারের সমান্তরালে নির্বাচন বিলম্ব হলে গণতন্ত্রের স্থবিরতা বাড়বে
অনিশ্চয়তা তৈরি হলে অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে
#BangladeshElection2025
#ডিসেম্বরনির্বাচন
#ড.ইউনূস
#BNP
#Jamaat
#রাজনীতি
#সংস্কার_বিচার_নির্বাচন
#নির্বাচন_সংকট
#ElectionTimeline
#কালবেলা_বিশেষ
বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সময়সীমা এখন একটি কেন্দ্রীয় বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে, রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও তীব্র হতে পারে—এ আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী ধরনের নির্দিষ্ট রূপরেখা উপস্থাপন করে এবং সেই রূপরেখা দলগুলো কতটা গ্রহণযোগ্য মনে করে।