ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫
বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিস্ফোরক পোস্টে তিনি দাবি করেন, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের উপস্থিতিতে সুব্রতকে বিশেষ মিশনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
জুলকারনাইন জানান, সুব্রতকে প্রস্তাব দেওয়া হয়—মিশন সফল হলে তাকে ও তার পরিবারকে কানাডায় স্থায়ীভাবে পাঠানো হবে। তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় স্নাইপার রাইফেল, দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে হামলা, এবং আবহাওয়ার প্রভাব নিয়ে।
জুলকারনাইন লিখেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সময় শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর তালিকায় প্রথমেই ছিল সুব্রত বাইন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপের মুখে সে মোল্লা মাসুদকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পরে কলকাতায় গ্রেফতার হলেও, অপরাধী জয় ও ভারতীয় ‘র’ এর সহায়তায় ছাড়া পেয়ে যায়।
ভারতে থেকেই মধু বাবু, মাসুদসহ একাধিক সহযোগী নিয়ে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে কমান্ডো প্রশিক্ষণ নেয় সে। ২০০৩ সালে ঢাকায় ফিরে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডেও জড়িত ছিল বলে দাবি করেছেন সায়ের।
জুলকারনাইন দাবি করেন, ‘র’ এর পরামর্শে সুব্রত পরে চীন হয়ে দুবাই পাড়ি জমায়। সেখানে বিলাসবহুল জীবনে থাকলেও, তার মূল কাজ ছিল মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের চক্রে প্রবেশের চেষ্টা করা—টাইগার মেমনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর মাধ্যমে। তবে সেই মিশন সফল হয়নি।
পরবর্তীতে ভারতীয় গোয়েন্দাদের পরিকল্পনায় সুব্রত নেপাল হয়ে ভারতে ফিরে আসে এবং কলকাতা STF-এর মাধ্যমে আবার গ্রেফতার হয়। সেখান থেকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের সিলেট সীমান্ত দিয়ে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জুলকারনাইন দাবি করেন, ঢাকায় এনে সুব্রতকে রাখা হয় র্যাব সদর দপ্তরে। তাকে দেওয়া হয় বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং জানানো হয়, ‘টার্গেট’ একজন প্রবাসী রাজনৈতিক নেতা যিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাকে পাকিস্তানি পাসপোর্টে লন্ডন পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল এবং কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে মিশন বাস্তবায়নের কথা জানানো হয়।
তিনি বলেন, “এই পরিকল্পনায় সরকার (তৎকালীন) সর্বোচ্চ পর্যায়ের আগ্রহ ছিল, এবং সর্বোচ্চ মহলের অনুমতির অপেক্ষায় থাকা হচ্ছিল।”
জুলকারনাইনের দাবি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার বিপ্লবে হাসিনা সরকার পতনের পর, মিশন স্থগিত করা হয়। এরপর সুব্রতকে তার কন্যা বিথির কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং ‘পরবর্তী নির্দেশনার’ অপেক্ষার কথা জানানো হয়।
এ সময় থেকেই সুব্রত বাইন আবার যোগাযোগ করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে। বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ফোনসহ ফের সক্রিয় হতে শুরু করে। তাকে সহায়তা করতে মোল্লা মাসুদকেও বাংলাদেশে পাঠানো হয়। নেপালে পলাতক সন্ত্রাসী লেদার লিটনের মাধ্যমে পলাতক আওয়ামী শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছিল বলে দাবি করেন জুলকারনাইন।
সম্প্রতি কুষ্টিয়ার কালিশংকরপুরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযানে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে আরও দুই সহযোগী আরাফাত ও শরীফকে আটক করা হয়। অভিযানে ৫টি বিদেশি পিস্তল, ৫৩ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন ও স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার হয়।
🛑 দ্রষ্টব্য:
জুলকারনাইন সায়েরের পোস্টের এইসব দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।