ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুইজন রেড ক্রস কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং একাধিক শিশু। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, যেখানে গাজার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা নারী-শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক অবস্থান করছিলেন।
ইসরায়েল গত এক সপ্তাহ ধরে গাজায় স্থল অভিযান ও বোমাবর্ষণ আরও তীব্র করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত সাত দিনে ৬০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন,
“এটি কোনো সামরিক অভিযান নয়, এটি একটি মানবিক বিপর্যয়।”
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) জানায়, গাজায় বর্তমানে ৭০ হাজারেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
চলমান অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের প্রবেশ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে,
“চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে হাজার হাজার শিশু অনাহারে মারা যেতে পারে।”
গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়,
“ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত গাজার ৭৭ শতাংশ ভূখণ্ডে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।”
এই এলাকাগুলো থেকে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী,
ইসরায়েলের ১৯ মাসের হামলায় এখন পর্যন্ত যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তাদের ৩১ শতাংশই শিশু।
এই উচ্চমাত্রার শিশু মৃত্যুহার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধবিরোধী চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয় বলে মত দিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
স্পেন, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপের একাধিক দেশ ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলকে “গণহত্যাকারী রাষ্ট্র” বলায় দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনাও বাড়ছে।
জাতিসংঘে আগামী মাসে এই সংকট নিয়ে একটি জরুরি অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে, যেখানে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক প্রস্তাব পাসের চেষ্টা হবে।
গাজার পরিস্থিতি প্রতিদিনই আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। স্কুল, হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র—কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপ বাড়লেও এখনো যুদ্ধ থামার স্পষ্ট কোনো আলামত নেই।
এই অবস্থায় গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ গভীর হচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে।
সূত্র: আল-জাজিরা, গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP)