ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫
তারা বলেছেন, জার্মান অস্ত্র গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সামরিক দমনপীড়নে ব্যবহৃত হওয়ায় জার্মানি হয়তো আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধে জড়িত হতে পারে।
SPD-এর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মুখপাত্র আদিস আহমেতোভিচ জার্মান ম্যাগাজিন Stern-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
“জার্মান অস্ত্র দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বা মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করা অনুচিত। ইসরায়েলকে এখনই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে এবং আলোচনা শুরু করতে হবে।”
SPD-এর আরও এক সিনিয়র নেতা রালফ স্টেগনার এক বিবৃতিতে বলেন,
“জার্মানি অতীতে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল আত্মরক্ষার যুক্তিতে। কিন্তু গাজা ও পশ্চিম তীরের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই যুক্তি টেকে না। বরং এতে যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সমর্থন জার্মানিকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করে ফেলছে।
SPD-র সংসদ সদস্য ইসাবেল কাদেমার্তোরি সতর্ক করে বলেন,
“জার্মানি যদি এখনই অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ না করে, তাহলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আমাদের বিরুদ্ধেই মামলা হতে পারে। যুদ্ধাপরাধে সহায়তার অভিযোগে আমরা অভিযুক্ত হতে পারি।”
তিনি বলেন, ইসরায়েলে ট্যাংকের গোলাবারুদ, যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য সামরিক রফতানি অবিলম্বে সীমিত করা উচিত।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে জার্মান সরকার মোট ১.১৮ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ২৮ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র ইসরায়েলের জন্য অনুমোদিত, যা ইসরায়েলকে জার্মানির শীর্ষ ১০ অস্ত্র আমদানিকারকের মধ্যে স্থান দিয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎস বারবার বলেছেন,
“ইসরায়েলের নিরাপত্তা জার্মান রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ।”
তবে সমালোচকদের মতে, এই অবস্থান ইসরাইলের প্রতি অন্ধ আনুগত্যে রূপ নিয়েছে, যা দেশটির আন্তর্জাতিক মর্যাদা ও নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে গাজা উপত্যকায় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি গৃহহীন, খাদ্য, ওষুধ ও নিরাপদ পানির সংকটে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।
যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েল সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
জার্মানির সংসদ সদস্যদের এই অবস্থান দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও আন্তর্জাতিকভাবে নীতিগত দায়বদ্ধতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অস্ত্র রপ্তানি ও মানবাধিকার রক্ষার মাঝে নৈতিক দ্বন্দ্ব এখন জার্মান রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছে।