দুর্গেশ সরকার, গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০১:২২ পিএম
আপডেট: শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০১:২২ পিএম
গত ২৯ জুলাই মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা তাদের জুমবাগানে ঢুকে দুই হাজারের বেশি লতানো পান গাছ কেটে ফেলে। এতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়েছে পরিবার দুটি। স্থানীয়রা জানায়, এই পানজুম দুটির বাজারমূল্য কোটি টাকারও বেশি।
ঘটনার পরদিন, ক্ষতিগ্রস্ত রিশন কংওয়াং-এর মেয়ে রিমায়া খংলা নিজের ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন, যা ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে। পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো:
“...বাবার চেহারাটা দেখলে কলিজা ফেটে যায়, এই মানুষটি আমাদের বড় করতে জীবনে কতটা কষ্ট করেছে। এখন আর বাবার কাছে কিছু আবদার করতে মন চায় না। ভাবি, কী করলে বাবার কষ্টটা একটু কমবে...
…পান গাছ গড়ে তুলতে ৫ বছর লাগে, কিন্তু একটা রাতেই সব শেষ। এখন আমাদের সামনে শুধুই শূন্যতা। বই-খাতা, বাজার, বিদ্যুৎ, ওষুধ—সবই এখন দুঃস্বপ্ন…”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খাসিয়া পরিবারগুলোর আয়ের প্রধান উৎস এই পানজুম। এখান থেকেই চলতো সংসার, চলতো ভাইবোনদের পড়াশোনা, চিকিৎসা ও নিত্য খরচ।
রিমায়া আরও লেখেন,
“২৯ জুলাই, ২০২৫—এই দিনটা আমাদের জীবনে চিরকাল দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে। একটা কৃষকের গাছ মানে শুধু ফল নয়, সেটাই তার জীবন... সেই জীবনটাই কেউ কেটে নিয়ে গেল।”
রিমায়া খংলা এবং অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তরা এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন,
দোষীদের দ্রুত শনাক্ত ও শাস্তির আওতায় আনা হোক
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হোক
পানজুমের ক্ষয়ক্ষতির নিরপেক্ষ তদন্ত হোক
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবার দিবাগত রাতে (২৮ জুলাই) দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে পানজুমে হামলা চালায়। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, পুরো জুমবাগান জুড়ে কাটা গাছের ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে আছে।
ঘটনার পর পুরো খাসিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়, ক্ষোভ ও শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, একটি জাতিসত্তার অস্তিত্ব ও মর্যাদার উপর আঘাত।