ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ২০২৪ নির্বাচনের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, "হার্ভার্ড এখন উগ্র বামপন্থি এবং ‘পাখির মস্তিষ্কের’ বোকা প্রফেসরদের নিয়োগ দিচ্ছে", যার জন্য তাদের বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশল গবেষণার জন্য বরাদ্দ ৩ বিলিয়ন ডলারের অনুদান বাতিল করা উচিত।
ট্রাম্প আরও বলেন, এই বরাদ্দ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড স্কুলগুলোতে দেওয়া হবে, যেখানে “বাস্তব দক্ষতা” শেখানো হয়।
হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল। ইতিমধ্যে তারা আদালতে মামলা করেছে অনুদান বাতিলের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি জানায়, মে মাসে একাধিক সরকারি সংস্থা—যেমন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ (NIH), এনার্জি বিভাগ, ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট—বিভিন্ন অনুদান বাতিল করে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, "হার্ভার্ডের কার্যক্রম আমাদের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়"।
ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের:
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষমতা স্থগিত করতে চেয়েছিল (যা আদালতের আদেশে এখন বন্ধ),
করমুক্ত সুবিধা বাতিলের হুমকি দিয়েছে,
সাদা, এশীয়, পুরুষ ও স্ট্রেইট আবেদনকারীদের প্রতি বৈষম্য হয়েছে কি না, তা তদন্ত করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যে তহবিলগুলো জৈব-চিকিৎসা বা উচ্চ প্রযুক্তি গবেষণায় ব্যবহৃত হয়, তা ট্রেড স্কুলে বাস্তবায়ন অযোগ্য। কারণ ট্রেড স্কুলের অবকাঠামো বা সক্ষমতা ভিন্ন। ফলে ট্রাম্পের প্রস্তাব রাজনৈতিক বার্তা হতে পারে, বাস্তব পরিকল্পনা নয়।
বর্তমানে হার্ভার্ডে ৬,৮০০-এর বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী রয়েছে, যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২৭ শতাংশ। এদের মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয় বড় অঙ্কের টিউশন ফি রাজস্ব আয় করে। ট্রাম্প প্রশাসনের ভর্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে হাজারো শিক্ষার্থীকে স্থানান্তরিত হতে হতো।
ট্রাম্প নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যালে' লিখেছেন:
“হার্ভার্ড এখন উগ্র বামদের নিয়ন্ত্রণে, যারা বোকা এবং যুক্তিবোধহীন। সরকার তাদের অনুদান দেওয়া বন্ধ করুক।”
বিষয় | হার্ভার্ডের অবস্থান | ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান |
---|---|---|
গবেষণা অনুদান | একাডেমিক স্বাধীনতা রক্ষায় অনুদান প্রয়োজন | ৩ বিলিয়ন ডলার কেটে ট্রেড স্কুলে দেওয়ার প্রস্তাব |
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি | বৈচিত্র্য এবং গ্লোবাল প্রতিযোগিতা | স্থগিত করতে চেয়েছে প্রশাসন |
করমুক্ত সুবিধা | আইনানুগ সুবিধা | বাতিলের পরিকল্পনা |
নিয়োগ নীতি | বৈচিত্র্য ও আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ | সাদা/পুরুষদের প্রতি বৈষম্য তদন্তের দাবি |
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি এই হুমকিকে অনেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম প্রচারণার অংশ হিসেবে দেখছেন, যেখানে ট্রাম্প তার সমর্থকদের ‘অ্যান্টি-এলিট’ ও ‘অ্যান্টি-লেফট’ মনোভাব উসকে দিতে চাচ্ছেন।