ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫
বাংলাদেশে গুমকে রাজনৈতিক দমন নীতির একটি "সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক" অংশ হিসেবে ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে গুম কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে গুম কমিশনের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন,
“জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অতীতে রাজনৈতিকভাবে পরিকল্পিত গুম পরিচালিত হয়েছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত দমনযন্ত্র।”
মোট ১,৮৫০টি অভিযোগ বিশ্লেষণ করা হয়েছে
এর মধ্যে ২৫৩টি গুমের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে
১২ জনের গুমে জড়িতদের প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে
৮১% অভিযোগ জীবিত ভিকটিমদের, বাকি ১৯% এখনও নিখোঁজ
মইনুল ইসলাম জানান, গুমের শিকাররা ছিলেন:
মেধাবী ছাত্র, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার এবং বিভিন্ন পেশাজীবী। এইসব গুমের ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার নির্যাতন এবং রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্টভাবে পাওয়া গেছে।
গুমের ঘটনার সাথে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর সম্পৃক্ততার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। তবে এটিকে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলেও উল্লেখ করেন:
“বাংলাদেশি যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু ভারতীয়দের বিষয়ে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।”
নুর খান লিটন (কমিশন সদস্য) বলেন:
“ডিজিএফআই-এর কর্মতৎপরতার মধ্যে সেনাবাহিনীর সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই বলেই মনে হয়েছে, তবে তারা জানতো না—এ কথা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।”
মো. সাজ্জাদ হোসেন (কমিশন সদস্য):
“ভারতে আটক বাংলাদেশিদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। দেখা হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ গুমের শিকার কি না।”
২০১৬ সালের হলি আর্টিজান হামলার উদাহরণ দিয়ে গুম কমিশনের সভাপতি বলেন,
“সন্ত্রাস একটি বাস্তব হুমকি হলেও, তা দমন করতে গিয়ে আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং স্বচ্ছতার নীতি থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা তখনই ভেঙে পড়ে, যখন রাজনৈতিক স্বার্থে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণা ব্যবহৃত হয়।”