ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫
রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এর পাইলট প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এই উদ্যোগের আওতায় প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তারা রাজধানীর গুলশান, উত্তরা, ও নীলক্ষেত এলাকায় স্থাপিত নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে জনগণকে বিভিন্ন সরকারি ডিজিটাল সেবা প্রদান করবেন। ইতোমধ্যে গুলশান ও উত্তরা কেন্দ্র কার্যক্রম শুরু করেছে এবং নীলক্ষেত কেন্দ্র শিগগিরই চালু হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই প্রকল্পটি দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য কমাতে এবং হয়রানিমুক্ত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।” তিনি সরকারের আইসিটি বিভাগকে প্রবাসীদের জন্য নাগরিক সেবা কেন্দ্র স্থাপনেরও নির্দেশ দেন।
আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের আওতায় পোস্ট অফিসসহ পরিত্যক্ত সরকারি স্থাপনাগুলোকে আধুনিক কো-ওয়ার্কিং স্পেসে রূপান্তর করা হবে। এগুলো পরিচালনায় থাকবেন প্রশিক্ষিত স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, জানান, “এই শূন্য বাজেটের প্রকল্প প্রমাণ করে দেয় দেশের বিদ্যমান সম্পদের সদ্ব্যবহার করেই পরিবর্তন আনা সম্ভব।” তিনি বলেন, নাগরিক সেবা কেন্দ্রগুলো হাঁটা-দূরত্বে থাকায় সাধারণ মানুষ সহজেই জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, কর ফাইলিংসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রকল্পের আওতায় ২০০ জন নারী ও পুরুষ আবেদনকারীর মধ্যে থেকে বাছাই করে ১০০ জন (৫০ জন নারী, ৫০ জন পুরুষ) উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তাঁদের ডিজিটাল লিটারেসি, গ্রাহকসেবা ও সেবাপ্রদানে দক্ষ করে তোলা হয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, “নাগরিক সেবা বাংলাদেশ শুধু একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি সরকার ও জনগণের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর সেতুবন্ধন—যার চালিকাশক্তি স্থানীয় উদ্যোক্তারা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে একটি শিশু জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই জন্মসনদ পায়—এটাই তার নাগরিক স্বীকৃতি।”
উদ্যোক্তাদের বিষয়ে বলা হয়, তাঁরা জায়গার মালিকদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে ভাড়া পরিশোধ করবেন এবং সেবা মান বজায় না থাকলে লাইসেন্স বাতিলের সুযোগ থাকবে।
উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন:
নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ
আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী
পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর
এই উদ্যোগ দেশের ডিজিটাল সেবার অভিগম্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যুব ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।