ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫
শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওর সোকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, "এই পৃথিবী যদি টিকে থাকতে চায়, তাহলে আমাদের এই অর্থলোভী, পরিবেশবিধ্বংসী সভ্যতার পথ থেকে সরে আসতে হবে।"
বক্তৃতায় ড. ইউনূস বলেন, "মানুষের টিকে থাকার জন্য বর্তমান সভ্যতার কাঠামো উপযোগী নয়। ধনী-গরিবের বৈষম্য বেড়েই চলছে, পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে প্রতিনিয়ত।"
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "পাঁচজন মানুষ একত্র হয়ে যদি ‘থ্রি জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলে এবং প্রতিজ্ঞা করে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করবে না— তবেই পরিবর্তন সম্ভব।"
ড. ইউনূস তার পরিচিত ‘থ্রি জিরো থিওরি’-র কথা তুলে ধরে বলেন, "শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ—এই তিনটি লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়েই একটি টেকসই ভবিষ্যৎ সম্ভব।"
তার মতে, বর্তমান প্রজন্মকে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করতে হবে। "চাকরি মানুষের সৃজনশীলতা দমন করে। অথচ সৃষ্টিশীলতাই মানবজাতির প্রকৃত শক্তি," বলেন ইউনূস।
তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি ও সম্ভাবনার প্রতি আশাবাদ জানিয়ে ইউনূস বলেন, "একটি নতুন পৃথিবী কল্পনা করো। কল্পনা মানুষের সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করে দেয়। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই সৃজনশীলতা রয়েছে—এটাই আমাদের প্রকৃত সম্পদ।"
তিনি সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন এবং জানান কীভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সময় পাশের এক গ্রামের দরিদ্র মানুষদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসকে সোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। বিশ্বব্যাপী সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে এ সম্মানে ভূষিত করা হয়।
সোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট সুজুকি অনুষ্ঠানে বলেন, “ড. ইউনূস এমন একজন চিন্তক, যিনি শুধু সমাজের কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না, বরং সমাধানের পথও দেখান।”