ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫
আপডেট : ২১ মে ২০২৫
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ৪৩ জন সিনেটর এবং সংসদ সদস্য। এতে তিনটি মূল দাবির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা মনে করছেন।
১. নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা: চিঠিতে বলা হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা প্রয়োজন। তারা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে শেষ তিনটি নির্বাচনে গণতান্ত্রিক বৈধতা ছিল না এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার।
২. জুলাই অভ্যুত্থানের ভুক্তভোগীদের ন্যায্য বিচার: অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যরা বাংলাদেশের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া বিপ্লবের ভুক্তভোগীদের জন্য স্বচ্ছ বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন। তারা মানবাধিকার সংস্থা, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দাবি করেন, বাংলাদেশে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং তাদের পরিবারের জন্য ন্যায্যতার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ভাঙা: চিঠিতে দাবি করা হয়, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, যা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত। তারা র্যাবকে ভেঙে ফেলার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেন এবং একই সঙ্গে এই বাহিনীর কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যরা ড. ইউনূসের কাছে লিখেছেন, "বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য এ পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।" তারা এই পরিবর্তনগুলোকে সমর্থন করার জন্য গঠনমূলকভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে এগোবে।
অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর এবং সংসদ সদস্যরা এ চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন, বিশেষ করে জুলাই বিপ্লব সম্পর্কে। তারা মনে করেন, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ, যেখানে সরকারের উচিত জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা এবং জাতি হিসেবে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর উপর আস্থা পুনঃনির্মাণ করা।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ৪৩ জন সিনেটর ও এমপির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন—
সিনেটর লারিসা ওয়াটার্স
সিনেটর ডেভিড শোব্রিজ
এলিজাবেথ ওয়াটসন-ব্রাউন এমপি
অ্যাবিগেল বয়েড (এনএসডব্লিউ এমএলসি)
শেন র্যাটেনবারি এমএলএ
মাইকেল বার্কম্যান এমপি
এছাড়াও আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।