জাহিদুল ইসলাম মেহেদী
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ শুধু একটি খাদ্যদ্রব্য নয়, এটি দেশের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতি বছরই সরকারি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইলিশ আহরণে নাকি নতুন রেকর্ড হচ্ছে। তবে বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা—বাজারে ইলিশের সংকট, আর দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
📉 বাজারে ঘাটতি, আকাশছোঁয়া দাম
বর্তমানে বাজারে ৫০০-১৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ২০০০ টাকা কেজি দরে, যা গত ৫ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সরকার যেখানে রেকর্ড আহরণের কথা বলছে, সেখানে বাজারে কেন এত ঘাটতি?
🎯 ইলিশের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলো:
১। রপ্তানির অগ্রাধিকার
অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটবার আগেই প্রতিবেশী দেশগুলোতে রপ্তানির কারণে স্থানীয় বাজারে সংকট বাড়ছে।
২। জলবায়ু ও পরিবেশগত পরিবর্তন
নদীর প্রবাহ হ্রাস, দূষণ এবং আবহাওয়ার বৈচিত্র্যের কারণে ইলিশের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটছে।
৩। অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট
মজুদদারি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।
📊 সরকারি দাবি বনাম বাস্তবতা
মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইলিশ আহরণ প্রায় ৬ লাখ টন ছুঁয়েছে। কিন্তু উপকূলবর্তী জেলেদের সংগঠনগুলো জানাচ্ছে, প্রকৃত চিত্র ভিন্ন। অতিরিক্ত আহরণ ও প্রজনন মৌসুমে অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা ইলিশের দীর্ঘমেয়াদি সংখ্যায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
🛑 করণীয় ও সুপারিশ:
রপ্তানি নীতিতে সংশোধন:
অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পরই রপ্তানি অনুমোদন দিতে হবে।
নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনা:
ইলিশ প্রজনন মৌসুমে নদীতে যথাযথ পানি প্রবাহ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।
বাজার তদারকি:
অসাধু মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ ও বাজার মনিটরিং জোরদার করা দরকার।
ইলিশ বাংলাদেশের গর্ব। অথচ বাস্তব চিত্র হলো—সরকারি অর্জন আর জনগণের অভিজ্ঞতার মাঝে এক বিশাল ফারাক। এই বৈপরীত্য দূর না করলে “ইলিশ উৎসব” একদিন শুধু বিত্তবানদের উৎসবেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
ইলিশ #ইলিশদাম #মাছেরসংকট #ইলিশরপ্তানি #BargunaNews #HilsaCrisis #BangladeshMarket #FishEconomy #HilsaPrice #OnlineNewsBD