ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫
আপডেট : ২৫ মে ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি একাধিক আন্তর্জাতিক চুক্তি ও নিজস্ব সাংবিধানিক নীতির কারণে বৈদেশিক সামরিক উপস্থিতি বিষয়ে বরাবরই সংযত ছিল। কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ ও ইউরোপে নিরাপত্তা হুমকি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বার্লিন এখন আগ্রাসন মোকাবিলায় আরও সক্রিয়।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ বলেন:
“বাল্টিক অঞ্চলের মিত্রদের নিরাপত্তা মানেই আমাদের নিরাপত্তা। এটি শুধু প্রতীকী পদক্ষেপ নয়, বরং ইউরোপের প্রতিরক্ষা কাঠামো পুনর্গঠনের সূচনা।”
অবস্থান: লিথুয়ানিয়া — রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ ও বেলারুশ সীমান্তঘেঁষা অঞ্চল
সংখ্যা: মোট ৫,০০০ সদস্য (৪,৮০০ সেনা + ২০০ বেসামরিক)
সম্পূর্ণ কার্যকারিতা: ২০২৭ সালের মধ্যে
প্রথম মোতায়েন: ২০১৭ সালে সীমিত সেনা পাঠানো হয়, এখন তা পূর্ণাঙ্গ ব্রিগেডে উন্নীত
লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের ক্যাথেড্রাল স্কোয়ারে সামরিক হেলিকপ্টার প্রদর্শনের মাধ্যমে এই মোতায়েনের তাৎপর্য উদ্যাপন করা হয়।
জার্মানি:
২% জিডিপি প্রতিরক্ষা ব্যয়ে বরাদ্দের লক্ষ্য
বিশেষ তহবিল: $১১৩ বিলিয়ন (প্রতিরক্ষা সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য)
লিথুয়ানিয়া:
২০২৬ সাল থেকে প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ৫–৬% করার ঘোষণা
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বোরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন:
“জার্মানি কেবল প্রতিক্রিয়াশীল নয়, আমরা এখন ন্যাটোর প্রতিরক্ষায় সক্রিয় ও নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা নিচ্ছি।”
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেদা বলেন:
“এই দিনটি আমাদের ইতিহাসে স্মরণীয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম জার্মান সেনাবাহিনী দীর্ঘমেয়াদে অন্য দেশে স্থায়ীভাবে মোতায়েন হলো। এটি শুধু সামরিক নয়, রাজনৈতিক আস্থারও বহিঃপ্রকাশ।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মোতায়েন:
জার্মানির আত্মনিয়ন্ত্রণ নীতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন
ন্যাটোর পূর্ব সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন প্রতিরক্ষা বলয়
রাশিয়াকে কৌশলগত বার্তা: ইউরোপ এখন প্রস্তুত
এমন এক সময়ে যখন ইউরোপ যুদ্ধ ও অস্থিরতার প্রান্তে দাঁড়িয়ে, জার্মানির এই সাহসী সিদ্ধান্ত শুধু সামরিক কৌশল নয়, বরং একটি নতুন ভূরাজনৈতিক মানচিত্রের সূচনা। দীর্ঘ সময় ধরে ‘নমনীয় ইউরোপ’ নাম ধারণ করা দেশ এখন ‘নেতৃত্বদানকারী ইউরোপ’-এ রূপ নিচ্ছে।