স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫
আপডেট : ২৫ মে ২০২৫
এই ম্যাচ ছিল শুধু একটি জয় নয়, বরং দুটি কিংবদন্তির বিদায়ের সাক্ষী হয়ে রইল—কার্লো আনচেলত্তি ও লুকা মড্রিচ।
রিয়ালের ডাগআউট থেকে বিদায় নিলেন ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ৬৫ বছর বয়সী এই কোচ দুই দফায় ৩৫০টির বেশি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন ক্লাবটির হয়ে। এবার তার গন্তব্য ব্রাজিল জাতীয় দল।
আনচেলত্তির কোচিংয়ে রিয়াল ঘরে তুলেছে মোট ১৫টি শিরোপা—এর মধ্যে রয়েছে ৩টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৩টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ২টি লা লিগা, ২টি কোপা দেল রে, ৩টি সুপার কাপ এবং ২টি স্প্যানিশ সুপার কাপ।
ম্যাচ শেষে আবেগঘন এক ভাষণে তিনি বলেন, “এই ক্লাবের কোচ হওয়া ছিল আমার জীবনের অন্যতম গর্বের মুহূর্ত। এটা কখনো ভুলব না।”
রিয়ালের মিডফিল্ড কিংবদন্তি লুকা মড্রিচও শনিবার রাতেই শেষবারের মতো ঘুরে দেখলেন বার্নাব্যুর আলো। ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রোয়াট তার ১৩ বছরের রিয়াল ক্যারিয়ারে ৫৯১টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৪৩টি গোল এবং জিতেছেন ২৮টি ট্রফি।
তার বিদায়ের মুহূর্তে পুরো স্টেডিয়াম উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে জানায় শ্রদ্ধা। মাঠে গার্ড অব অনারে তাকে বিদায় জানায় দুই দলের খেলোয়াড়রা। গ্যালারিতে দেখা যায় “ধন্যবাদ লুকা” লেখা অসংখ্য ব্যানার। পাশে ছিলেন তার স্ত্রী-সন্তান, সতীর্থ টনি ক্রুসের সঙ্গে ছিল এক আবেগঘন আলিঙ্গন।
মড্রিচ বলেন, “আমি চাইনি এই মুহূর্তটা আসুক, কিন্তু জীবন এমনই। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ সময়গুলোর একটি।”
এই ম্যাচেই রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ৩৮ ও ৮৩ মিনিটে করা তার দুই গোল লা লিগায় তার গোলসংখ্যা ৩০-এ নিয়ে যায়। পাঁচ গোলে পিছিয়ে পড়েছেন বার্সেলোনার রবার্ট লেভানডভস্কি।
রিয়াল এই জয়ে লা লিগায় দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করে। শিরোপা গেছে বার্সেলোনার হাতে, যারা রোববার খেলবে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে।
এছাড়া এই ম্যাচ দিয়েই বিদায় নেন আরও দুই ফুটবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি—সোসিয়েদাদের কোচ ইমানল আলগুয়াসিল শেষ করলেন সাড়ে ছয় বছরের কোচিং অধ্যায় এবং রেফারি মারিও মেলরো লোপেজ পরিচালনা করলেন নিজের শেষ ম্যাচ।
শনিবারের রাতটি রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে শুধুমাত্র একটি জয়ের গল্প নয়, বরং এক যুগের সমাপ্তি। আনচেলত্তি ও মড্রিচ—দুজনেই রিয়ালকে দিয়েছেন সাফল্যের নতুন সংজ্ঞা। নতুন অধ্যায়ের সূচনার আগে ক্লাব, সমর্থক এবং ফুটবলবিশ্ব জানাল তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বার্নাব্যু যেন হয়ে উঠেছিল এক আবেগঘন বিদায়বেলার শ্রেষ্ঠ মঞ্চ।