ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫
আপডেট : ২৫ মে ২০২৫
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে উপদেষ্টাদের মধ্যে আত্মসমালোচনার সুর ছিল। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’—যা দ্রুত চূড়ান্ত করে প্রকাশের পক্ষে একমত হন উপদেষ্টারা। কেউ কেউ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
🔹 সংকট মোকাবিলার পক্ষে উপদেষ্টারা
বর্তমান পরিস্থিতিতে পদত্যাগ না করে সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন উপদেষ্টারা।
একজন উপদেষ্টার মন্তব্য ছিল:
"এখন পদত্যাগ করলে অস্থিরতা বাড়বে, সরকারের ওপর আস্থা হারাবে জনগণ।"
🔹 রাজনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির তাগিদ
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব এবং ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে একজন ফোকাল পারসন নিয়োগের প্রস্তাব উঠে আসে।
🔹 আত্মসমালোচনা ও সতর্কতার আহ্বান
বিতর্কিত বক্তব্য ও করিডোর ইস্যুতে দুই উপদেষ্টা ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য এবং পোস্ট নিয়েও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ উঠে আসে।
বৈঠকে একাধিক উপদেষ্টা অভিযোগ করেন, সরকারের প্রতিটি উদ্যোগে বাধা আসছে। মন্ত্রণালয়গুলোতে অচলাবস্থার কথা তুলে ধরে বলা হয়,
“সচিবদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে, মবের দিকে ঠেলে দিয়ে এবং মামলার ভয় দেখিয়ে স্থবিরতা তৈরি করা হচ্ছে।”
এক উপদেষ্টার ভাষায়,
“কার্যক্রম অচল করতে একদল সাবেক আমলা সচেতনভাবে ষড়যন্ত্র করছে। অনেকেই ব্যক্তি স্বার্থে সরকারের ব্যর্থতা চায়।”
বৈঠক শেষে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে:
“সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে—সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে এবং সব কারণ জনসমক্ষে প্রকাশ করবে।”
পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন:
“প্রধান উপদেষ্টা যাচ্ছেন না। আমরাও কেউ যাচ্ছি না। কাজ শেষ না করে দায়িত্ব ফেলে যাওয়া অনৈতিক।”
তিনি আরও বলেন,
“এই সরকার উপভোগের নয়, দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। আমরা চাই অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সব শক্তি আমাদের সহায়তা করুক।”
বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াত একাধিক উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে আসছে। একইসঙ্গে মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যু, নির্বাচন কমিশন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে ঘিরে বিতর্ক উপদেষ্টা পরিষদে চাপ তৈরি করেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই দায়িত্বে থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। উপদেষ্টাদের মতামত জানতে চান তিনি।
আলোচনার শেষে উপদেষ্টারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন—জুলাই অভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আরও সক্রিয়, স্বচ্ছ ও সাহসী হতে হবে। সংলাপ ও জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে সামনে এগোনোর ওপর জোর দিয়েছেন সবাই।
“সংবিধান সংস্কার, নতুন নির্বাচন, বিচার ও দায়বদ্ধতার বাংলাদেশ—এই লক্ষ্য পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা দায়িত্বে থাকছি,” বলেন এক উপদেষ্টা।