ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫
আপডেট : ২১ মে ২০২৫
চালের দাম নিয়ে সারা দেশে যখন ক্ষোভ ও উদ্বেগ, তখন বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়লেন জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু এটো। আজ বুধবার (২১ মে) তিনি পদত্যাগ করেছেন।
সম্প্রতি এক সেমিনারে তিনি বলেন—
“আমার কখনও চাল কিনতে হয়নি, কারণ সমর্থকদের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছি।”
এই বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কারণ, সাধারণ মানুষ তখন রেকর্ড দামে চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত রবিবার (১৮ মে) সাগা অঞ্চলে একটি অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন এটো। সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে, অনেকেই বলেন, “এই মন্তব্য সাধারণ মানুষের বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সংযোগ রাখে না।”
এ ঘটনায় রাজনৈতিক চাপ বাড়ে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার-এর সংখ্যালঘু সরকারের ওপর। বিশেষ করে আগামী জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বিতর্ককে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পদত্যাগপত্রে এটো লেখেন—
“যখন মানুষ চালের উচ্চ মূল্যের সঙ্গে লড়াই করছে, তখন এমন মন্তব্য একদমই ঠিক হয়নি।”
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন। এটো আরও দাবি করেন, তিনি যে চাল উপহার পান তা বাদামী চাল, আর সাদা চাল কিনে খান।
সরকার ইতোমধ্যেই জরুরি মজুত থেকে বিপুল পরিমাণ চাল বাজারে ছাড়লেও সরবরাহে বড় ধরণের সমস্যা রয়ে গেছে।
অনেক সুপারমার্কেট এখন আমদানি করা সস্তা চাল বিক্রি করছে, কিন্তু তাও পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “সরবরাহ শৃঙ্খলার জটিল ব্যবস্থাই মূল সমস্যা।”
এতো’র জায়গায় আসতে পারেন জনপ্রিয় সাবেক পরিবেশমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি, যিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সন্তান।
প্রধানমন্ত্রী ইশিবার নিজেও একসময় কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি কৃষি সংস্কারের পরিকল্পনা করছেন, যেখানে ধান উৎপাদন বাড়ানো অন্যতম অগ্রাধিকার।
বিরোধী দল হুমকি দিয়েছিল, যদি এটো পদত্যাগ না করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে। শেষমেশ তার আগেই পদত্যাগ করলেন এটো।
জনগণের ক্ষোভও স্পষ্ট। ৭৩ বছরের শিজুকো ওশিমা বলেন:
“চাল মানেই জাপানের স্থিতিশীলতা। এই সময়ে কৃষিমন্ত্রীর এমন মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
সরকার জানিয়েছে, সরবরাহ ঠিক থাকলেও বাজারে চাল পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে, এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
📌 তথ্যসূত্র: এপি (Associated Press)